অতিথি

সপ্তক


এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে;- জানি না সে এইখানে
                                                          শুয়ে আছে কিনা।
অনেক হয়েছে শোয়া;- তারপর একদিন চলে গেছে
                                                          কোন দূর মেঘে।
অন্ধকার শেষ হলে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগেঃ
সরোজিনী চলে গেল অতদূর? সিঁড়ি ছাড়া- পাখিদের
                                                          মতো পাখা বিনা?
হয়তো বা মৃত্তিকার জ্যামিতিক ঢেউ আজ? জ্যামিতির
                                                ভূত বলেঃ আমি তো জানি না।
জাফরান- আলোকের বিশুষ্কতা সন্ধ্যার আকাশে আছে লেগেঃ
লুপ্ত বেড়ালের মতো; শূন্য চাতুরির মূঢ় হাসি নিয়ে জেগে।

একটি কবিতা
পৃথিবী প্রবীণ আরো হ'য়ে যায় মিরুজিন নদীটির তীরে;
বিবর্ণ প্রাসাদ তার ছায়া ফেলে জলে।
ও-প্রাসাদে কারা থাকে? কেউ নেই- সোনালি আগুন চুপে জলের শরীরে
নড়িতেছে- জ্বলিতেছে- মায়াবীর মতো জাদুবলে।
সে-আগুন জ্ব'লে যায়- দহে নাকো কিছু।
                        
সে-আগুন জ্ব'লে যায়
                        
সে-আগুন জ্ব'লে যায়
সে-আগুন জ্ব'লে যায় দহে নাকো কিছু।
নিমীল আগুনে অই আমার হৃদয়
                       
মৃত এক সারসের মতো।
                       
পৃথিবীর রাজহাঁস নয়-
                       
নিবিড় নক্ষত্র থেকে যেন সমাগত
সন্ধ্যার নদীর জলে এক ভিড় হাঁস অই- একা;
এখানে পেল না কিছু; করুণ পাখায়
তাই তারা ব'লে যায় শাদা, নিঃসহায়।
মূল সারসের সাথে হ'লো মুখ দেখা।


                           


রাত্রির সংকেতে নদী যতদূর ভেসে যায়- আপনার অভিজ্ঞান নিয়ে
       
আমারো নৌকার বাতি জ্বলে;
মনে হয় এইখানে লোকশ্রুত আমলকী পেয়ে গেছি
       
আমার নিবিষ্ট করতলে;
সব কেরোসিন- অগ্নি ম'রে গেছে; জলের ভিতরে আভা দ'হে যায়
       
মায়াবীর মতো জাদুবলে।
পৃথিবীর সৈনিকেরা ঘুমায়েছে বিম্বিসার রাজার ইঙ্গিতে
       
ঢের দূর ভূমিকার পর;
সত্য সারাসার মূর্তি সোনার বৃষের 'পরে ছুটে সারাদিন
       
'য়ে গেছে এখন পাথর;
যে-সব যুবারা সিংহীগর্ভ জ'ন্মে পেয়েছিলো কৌটিল্যের সংযম
       
তারাও মরেছে- আপামর।

যেন সব নিশিডাকে চ'লে গেছে নগরীতে শূন্য ক'রে দিয়ে-
       
সব ক্কাথ বাথরুমে ফেলে;
গভীর নিসর্গ সাড়া দিয়ে শ্রুতি বিস্মৃতির নিস্তব্ধতা ভেঙে দিতো তবু
       
একটি মানুষ কাছে পেলে;
যে-মুকুর পারদের ব্যবহার জানে শুধু, যে দীপ প্যারাফিন,
       
বাটা মাছ ভাজে যেই তেলে,
সম্রাটের সৈনিকেরা যে-সব লাবণি লবণরাশি খাবে জেগে উঠে,
       
অমায়িক কুটুম্বিনী জানে;
তবুও মানুষ তার বিছানায় মাঝরাতে নৃমুণ্ডের হেঁয়ালিকে
       
আঘাত করিবে কোন্‌খানে?
হয়তো নিসর্গ এসে একদিন ব'লে দেবে কোনো এক সম্রাজ্ঞীকে
       
জলের ভিতর এই অগ্নির মানে।

0 comments:

ই বুক