অতিথি
কিশোরের প্রতি
যৌবনের সুরাপাত্র গরল-মদির
ঢালো নি অধরে তব, ধরা-মোহিনীর
উর্ধ্বফণা মায়া-ভুজঙ্গিনী
আসে নি তোমার কাম্য উরসের পথটুকু চিনি
চুমিয়া চুমিয়া তব হৃদয়ের মধু
বিষবহ্নি ঢালে নিকো বাসনার বধূ
অন্তরের পানপাত্রে তব;
অম্লান আনন্দ তব, আপ্লুত উৎসব,
অশ্রুহীন হাসি,
কামনার পিছে ঘুরে সাজো নি উদাসী।
ধবল কাশের দলে, আশ্বিনের গগনের তলে
তোর তরে রে কিশোর, মৃগতৃষ্ণা কভু নাহি জ্বলে!
নয়নে ফোটে না তব মিথ্যা মরুদ্যান।
অপরূপ রূপ-পরীস্থান
দিগন্তের আগে।
তোমার নির্মেষ চক্ষে কভু নাহি জাগে!
আকাশকুসুবীথি দিয়া
মাল্য তুমি আনো না রচিয়া
ছলাময় গগনের নিচে!
-রূপ-পিপাসায় জ্বলি মৃত্যুর পাথারে
স্পন্দহীন প্রেতপুরদ্বারে
করো নিকো করাঘাত তুমি
সুধার সন্ধানে লক্ষ বিষপাত্র চুমি
সাজো নিকো নীলকন্ঠ ব্যাকুল বাউল!
অধরে নাহিকো তৃষ্ণা, চক্ষে নাহি ভুল,
রক্তে তব অলক্ত যে পরে নাই আজও রানী,
রুধির নিঙাড়ি তব আজও দেবী মাগে নাই রক্তিম চন্দন!
কারাগার নাহি তব, নাহিকো বন্ধন,
দীঘল পতাকা, বর্শা তন্দ্রাহারা প্রহরীর লও নি তুলিয়া,
-সুকুমার কিশোরের হিয়া!
-জীবনসৈকতে তব দুলে যায় লীলায়িত লঘুনৃত্য নদী,
বক্ষে তব নাচে নিকো যৌবনের দুরন্ত জলধি;
শূল-তোলা শম্ভূর মতন
আস্ফালিয়া উঠে নাই মন
মিথ্যা বাধাবিধানের ধ্বংসের উল্লাসে!
তোমার আকাশে
দ্বাদশ সূর্যের বহ্নি ওঠে নিকো জ্বলি
কক্ষচ্যুত, উল্কাসম পড়ে নিকো স্খলি,
কুজ্ঝটিকা আবর্তের মাঝে
অনির্বাণ স্ফুলিঙ্গের সাজে!
সব বিঘ্ন সকল আগল
ভাঙিয়া জাগো নি তুমি স্পন্দন-পাগল
অনাগত স্বপ্নের সন্ধানে
দুরন্ত দুরাশা তুমি জাগাও নি প্রাণে!
নিঃস্ব দুটি অঞ্চলির আকিঞ্চন মাগি
সাজো নিকো দিকভোলা দিওয়ানা বৈরাগী!
পথে পথে ভিক্ষা মেগে কাম্য কল্পতরু
বাজাও নি শ্মশান-ডমরু!
জোছনাময়ী নিশি তব, জীবনের অমানিশা ঘোর
চক্ষে তব জাগে নি কিশোর!
আঁধারের নির্বিকল্প রূপ,
স্পন্দহীন বেদনার কূপ
রুদ্ধ তব বুকে;
তোমার সম্মূখে
ধরিত্রী জাগিছে ফুল্ল সুন্দরীর বেশে,
নিত্য বেলাশেষে
যেই পুষ্প ঝরে,
যে বিরহ জাগে চরাচরে,
গোধূলির অবসানে শ্লোকম্লান সাঁঝে,
তাহার বেদনা তব বক্ষে নাহি বাজে,
আকাঙ্খার অগ্নি দিয়া জ্বালো নাই চিতা,
ব্যথার সংহিতা
গাহ নাই তুমি!
দরিয়ার তীর ছাড়ি দেখ নাই দাব-মরুভূমি
জ্বলন্ত নিষ্ঠুর!
নগরীর ক্ষুব্ধ বক্ষে জাগে যেই মৃত্যুপ্রেতপুর,
ডাকিনীর রুক্ষ অট্টহাসি
ছন্দ তার মর্মে তব ওঠে না প্রকাশি!
সভ্যতার বীভৎস ভৈরবী
মলিন করে নি তব মানসের ছবি,
ফেনিল করে নি তব নভোনীল, প্রভাতের আলো,
এ উদভ্রান্ত যুবকের বক্ষে তার রশ্মি আজ ঢালো, বন্ধু, ঢালো!
Monday, May 25, 2009
|
Labels:
ঝরা পালক
|
ই বুক
পুরোনো পোস্ট
যে জন্য এই ব্লগ
এই ব্লগটা জীবনানন্দ দাশ কে উৎসর্গীকৃত। যদি ব্লগ সম্বন্ধে কারো কোন পরামর্শ থাকে তা নির্দ্বিধায় জানাতে আহবান জানাচ্ছি। rnabiul at gmail.com এই ঠিকানায়।।
- 'আকাশলীনা': কবিতাটির আলোচনা
- 'আমাকে তুমি' কে মনে রেখে
- 'আমার এ ছোট মেয়ে': চিত্রনাট্য
- 'একজন মায়াবতী' অথবা 'বনলতা সেন'
- 'এতদিন কোথায় ছিলেন' উপন্যাস নিয়ে
- 'ক্যাম্পে' কবিতাটি নিয়ে আলোচনা
- 'চৌত্রিশ বছর'ঃ উপন্যাস
- 'ফেসবুক' এ জীবনানন্দ দাশ নিয়ে একটি ফ্যানপেইজ
- 'বনলতা সেন' কাব্যগ্রন্থালোচনা
- 'বনলতা সেন' কে মনে রেখে
- অবসরের গানঃ কবিতার আলোচনা
- আনসার ডট কমে জীবনানন্দ দাশ
- আনসার ডট কমে বনলতা সেন
- ইংরেজিতে লেখা কবির একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনী
- একটি কবিতার পঠন
- একশত ভাগ জৈবনিক
- এডওয়ার্ড ডিমক এবং জীবনানন্দ দাশ
- ক্লিনটন বি সিলি'র জীবনবৃত্তান্ত
- জীবনানন্দের আধুনিকতা
- জৈবনিক জীবনানন্দ
- নয়টি কবিতার ইংরেজি অনুবাদ
- পাঠানুভূতি
- বনলতা সেনের খোঁজে-০১
- বনলতা সেনের খোঁজে-০২
- বনলতা সেনের খোঁজে-০৩
- বনলতা সেনের খোঁজে-০৫
- বরিশাল এবং অন্যান্য
- বরিশালের সেই বাড়িটি
- বর্তমান প্রেক্ষাপটে জীবনানন্দ-আজফার হোসেন
- বাংলা উইকিপিডিয়ায় জীবনানন্দ
- ব্যাক্তি জীবনানন্দ
- মৃত্যু রহস্য-০২
- মৃত্যু রহস্য-০৩
- মৃত্যু রহস্য-০৪
- মৃত্যুরহস্য-০১
- মেরু সমুদ্রের মতো
- যাত্রা অভ্যন্তরে
- রৌদ্রের গন্ধ- ক্লিনটন বি সিলি
0 comments:
Post a Comment