অতিথি
চাঁদিনীতে
বেবিলোন কোথা হারায়ে গিয়েছে-মিশর-অসুর কুয়াশাকালো;
চাঁদ জেগে আছে আজও অপলক, মেঘের পালকে ঢালিছে আলো!
সে যে জানে কত পাথারের কথা, কত ভাঙা হাট মাঠের স্মৃতি!
কত যুগ কত যুগান্তরের সে ছিল জোছনা, শুক্লা তিথি!
হয়তো সেদিনও আমাদেরই মতো পিলুবারোয়ার বাঁশিটি নিয়া
ঘাসের ফরাশে বসিত এমনি দূর পরদেশী প্রিয় ও প্রিয়া!
হয়তো তাহারা আমাদেরই মতো মধু-উৎসবে উঠিত মেতে
চাঁদের আলোয় চাঁদমারী জুড়ে, সবুজ চরায়, সবজি ক্ষেত!
হয়তো তাহারা মদঘূর্ণনে নাচিত কাঞ্চীবাধঁন খুলে
এমনি কোন এক চাঁদের আলোয়-মরু ওয়েসিসে তরুর মূলে!
বীর যুবাদল শত্রুর সনে বহুদিনব্যাপী রণের শেষে
এমনি কোন-এক চাঁদিনীবেলায় দাঁড়াত নগরীতোরণে এসে!
কুমারীর ভিড় আসিত ছুটিয়া, প্রণয়ীর গ্রীবা জড়ায়ে নিয়া
হেঁটে যেত তারা জোড়ায় জোড়ায় ছায়াবীথিকার পথটি দিয়া!
তাদের পায়ের আঙুলের ঘায়ে খড়- খড়- পাতা উঠিত বাজি,
তাদের শিয়রে দুলিত জোছনা, চাঁচর-চিকন পত্ররাজি!
দখিনা উঠিত মর্মরি মধুবনাণীর লতা-পল্লব ঘিরে
চপল মেয়েরা উঠিত হাসিয়া-এল-বল্লভ-এল রে ফিরে!’
তুমি ঢুলে যেতে, দশমীর চাঁদ তাহাদের শিরে সারাটি নিশি,
নয়নে তাদের দুলে যেতে তুমি-চাঁদিনী-শরাব, সুরার শিশি!
সেদিনও এমনি মেঘের আসরে জ্বলছে পরীর বাসরবাতি,
হয়তো সেদিনও ফুটেছে মোতিয়া-ঝরেছে চন্দ্রমল্লীপাতি!
হয়তো সেদিনও নেখাখোর মাছি গুমরিয়া গেছে আঙুরবনে,
হয়তো সেদিনও আপেলের ফুল কেপেঁছে আঢুল হাওয়ার সনে!
হয়তো সেদিনও এলাচির বন আতরের শিশি দিয়েছে ঢেলে
হয়তো সেদিনও ডেকেছে পাপিয়া কাঁপিয়া কাঁপিয়া সরোর শাখে,
হয়তো সেদিনও পাড়ার নাগরী ফিরেছে এমনি গাগরি কাঁখে!
হয়তো সেদিনও পানসী দুলায়ে গেছে মাঝি বাকাঁ ঢেউটি বেয়ে,
হয়তো সেদিন মেঘের শকুনডানায় গেছিল আকাশ ছেয়ে!
হয়তো সেদিনও মাণিকজোড়ের মরা পাখাটির ঠিকানা মেগে
অসীম আকাশে ঘুরেছে পাখিনী ছট্ফট্ দুটি পাখার বেগে!
হয়তো সেদিনও খুর খুর করে খরগোশছানা গিয়েছে ঘুরে
ঘন মেহগিনি টার্পিন তলে- বালির জর্দা বিছানা ফুঁেড়!
হয়তো সেদিনও জানালার নীল জাফরির পাশে একেলা বসি
মনের হরিনী হেরেছে তোমারে-বনের পারের ডাগর শশী!
শুক্লা একাদশীর নিশীথে মণিহর্ম্যের তোরণে গিয়া
পারাবত-দূত পাঠায়ে দিয়েছে প্রিয়ের তরেতে হয়তো প্রিয়ো!
অলিভকুঞ্জে হা হা করে হাওয়া কেঁেদছে কাতর যামিনী ভরি!
ঘাসের শাটিনে আলোর ঝালরে মার্টিল পাতা পড়েছে ঝরি’!
উইলোর বন উঠেছে ফুঁপায়ে-ইউ তরুশাখা গিয়েছে ভেঙে,
তরুনীর দুধ-ধবধবে বুকে সাপিনীর দাঁত উঠেছে রেঙে!
কোন্ গ্রীস কোন্ কার্থেজ, রোম ক্রবেদুর যুগ কোন,-
চাঁদের আলোয় স্মৃতির কবর শফরে বেড়ায় মন!
জানি না তো কিছু-মনে হয় শুধু এমনি তুহিন চাঁদের নিচে
কত দিকে দিকে-কত কালে কালে হয়ে গেছে কত কী যে!
কত যে শ্মশান-মশান কত যে-কত যে কামনা পিপাস-আশা
অস্তচাঁদের আকাশে বেঁধেছে আরব-উপন্যাসের বাসা!
Thursday, December 25, 2008
|
Labels:
ঝরা পালক
|
ই বুক
পুরোনো পোস্ট
যে জন্য এই ব্লগ
এই ব্লগটা জীবনানন্দ দাশ কে উৎসর্গীকৃত। যদি ব্লগ সম্বন্ধে কারো কোন পরামর্শ থাকে তা নির্দ্বিধায় জানাতে আহবান জানাচ্ছি। rnabiul at gmail.com এই ঠিকানায়।।
- 'আকাশলীনা': কবিতাটির আলোচনা
- 'আমাকে তুমি' কে মনে রেখে
- 'আমার এ ছোট মেয়ে': চিত্রনাট্য
- 'একজন মায়াবতী' অথবা 'বনলতা সেন'
- 'এতদিন কোথায় ছিলেন' উপন্যাস নিয়ে
- 'ক্যাম্পে' কবিতাটি নিয়ে আলোচনা
- 'চৌত্রিশ বছর'ঃ উপন্যাস
- 'ফেসবুক' এ জীবনানন্দ দাশ নিয়ে একটি ফ্যানপেইজ
- 'বনলতা সেন' কাব্যগ্রন্থালোচনা
- 'বনলতা সেন' কে মনে রেখে
- অবসরের গানঃ কবিতার আলোচনা
- আনসার ডট কমে জীবনানন্দ দাশ
- আনসার ডট কমে বনলতা সেন
- ইংরেজিতে লেখা কবির একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনী
- একটি কবিতার পঠন
- একশত ভাগ জৈবনিক
- এডওয়ার্ড ডিমক এবং জীবনানন্দ দাশ
- ক্লিনটন বি সিলি'র জীবনবৃত্তান্ত
- জীবনানন্দের আধুনিকতা
- জৈবনিক জীবনানন্দ
- নয়টি কবিতার ইংরেজি অনুবাদ
- পাঠানুভূতি
- বনলতা সেনের খোঁজে-০১
- বনলতা সেনের খোঁজে-০২
- বনলতা সেনের খোঁজে-০৩
- বনলতা সেনের খোঁজে-০৫
- বরিশাল এবং অন্যান্য
- বরিশালের সেই বাড়িটি
- বর্তমান প্রেক্ষাপটে জীবনানন্দ-আজফার হোসেন
- বাংলা উইকিপিডিয়ায় জীবনানন্দ
- ব্যাক্তি জীবনানন্দ
- মৃত্যু রহস্য-০২
- মৃত্যু রহস্য-০৩
- মৃত্যু রহস্য-০৪
- মৃত্যুরহস্য-০১
- মেরু সমুদ্রের মতো
- যাত্রা অভ্যন্তরে
- রৌদ্রের গন্ধ- ক্লিনটন বি সিলি
0 comments:
Post a Comment